কাল প্রথম নতুন ভেসপা চালিয়ে অফিসে গেলাম।
বাইকটিকে রাস্তায় নামানোর অনুমতি পেতে ৮/৯ দিন লেগে গেল। খেয়াল করে দেখলাম রাস্তায় নামার কিছু পরেই আমার মাঝে একটা এডভ্যাঞ্চার ভাব তৈরি হয়েছে। সবসময় গাড়ির ভিতরে কাচ তুলে রাখি বলে খেয়াল করিনি। ধুলো, ধুঁয়া আর হর্নের চিৎকার – রাস্তায় সব মানুষ যেন উন্মাদ হয়ে থাকে, অস্থির আর উদ্ভ্রান্ত। রাস্তায় নামার কিছুক্ষনের মাঝে আমিও যেন অন্যরকম হয়ে যাই। শুধু দৌড়, ফাঁক খুজে গাড়ির মাথা ঢুকিয়ে দেয়া, কেও টপকে গেল কিনা, প্রতিটা মুহূর্তে সজাগ হয়ে থাকা।
যারা গাড়ি চালায় তাদের হাতে যদি পালস মিটার লাগিয়ে দেখা যেত, দেখা যেত রক্ত কতটা উত্তেজনায় প্রবাহিত হচ্ছে।
১৫০ সিসির এই মোটর সাইকেলটি ২৪৫,০০০ টাকায় কিনেছি।
ঠিক ৫২ বছর আগে, ১৯৭০ সালে আব্বা একটা ভেসপা কিনে এনেছিলেন। রঙটা সাদা ছিল না, ওটা ছিল ভেসপার ক্লাসিক নীল রঙ। ১৯৭২ সালের কোন এক সন্ধায় লম্বা জুলফি আর বেলবটম ট্রেডমারকড হাইজ্যাকাররা স্টেনগান উঁচিয়ে আব্বাকে নামিয়ে ভেসপা নিয়ে যায়।
ক্লান্ত, বিধ্বস্ত ও অপমানিত আব্বা হাটতে হাটতে বাসায় ফিরে আসে। আমি তখন মাত্র ৭ বছরের কিশোর।
ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখ আমি সাদা ভেসপাটি কিনে বাসায় আনি। এ দিনটি আব্বার মৃত্যুদিবস।